বাসাতে
বাসাতে গিয়ে যারা বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য বাজারের থেকে কম দামে বিক্রি
করে, তেমনই একটি মেয়ে বাসাতে আজকে বিকালে এসেছিল। প্রথমে দরজা খুলতেই
চাচ্ছিলাম না, কিন্তু মেয়েটার ব্যাবহার চমৎকার ভালো আর সুন্দর। তাই বিশ্বাস
করে দরজা খুলি। এরপর মেয়েটির সাথে অনেকক্ষণ কথা হয়, ওর কাছ থেকে একটা
শ্যাম্পু কেনা হয়।
কিন্তু আসল কথা এগুলা না। আসল বিষয় হল মেয়েটা!!!
মেয়েটা একটা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বছরই ভর্তি হয়েছে, এখনও ক্লাস শুরু হয়নি। ও অনেক চমৎকার করেই কথা বলে, অনেক বন্ধুসুলভ। তাই একটু ইতস্তত করে জিজ্ঞাসা করেই ফেললাম, ''এই চাকরি করতে তোমার সমস্যা হয় না?'' ও অনেক সুন্দর করে একটা হাসি দিয়ে বলে, ''না আপু। এমনিতে কোন সমস্যা হয় না। শুধু এই সিঁড়ি দিয়ে বারবার উঠানামা করাতেই যা কষ্ট!'' এরপর আমি কিছু আর বলি নাই। ও নিজের থেকেই বলা শুরু করে এরপর, ''আসলে সমস্যা বলতে আপু, এখানে নিজের কোন সিকিউরিটি নেই। সেই বাসাতে আমি ঢুকি না, যে বাসাতে নাকি দরজা পর্যন্ত কোন মেয়ে আসে। আর অনেকেই অনেক খারাপ ব্যাবহার করে। আমি বুঝি যে সময় এখন খারাপ, অবিশ্বাস করাটা স্বাভাবিক, কিন্তু মাঝে মাঝে অনেক কষ্ট লাগে।'' অন্য কোন জবের জন্য ট্রাই করার কথা বলতেই বলল যে আড়ং এ এই পর্যন্ত কয়েকশ বার নাকি সিভি দেওয়া হয়ে গেছে। শেষে বাধ্য হয়ে এই জব করছে।
জব করাটা ওর জন্য কেনও দরকার সেটা জানালো। বাসা থেকে এখনই বিয়ে দেবার জন্য ওর বাবা-মা উঠে পড়ে লেগেছেন। কিন্তু ও এখন বিয়ে করতে চায় না। পড়ালেখা শেষ করে, ভালো কোন চাকরি করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে তারপর ও বিয়ে করতে চায়। ও চাকরি করুক, সেটা ওর বাবা-মা চান না। তাই রাগ করে ওর বাবা ওর সাথে কথা বলেন না। ও আমাকে বলে, ''জানেন আপু, আব্বুকে এতো ভালোবাসি যে আব্বুর সাথে কথা না বলে থাকতেই পারি না। কিন্তু আব্বু এতো রাগ করেন, আমি কেনও চাকরি করবো, আমি কেনও পড়ালেখা করবো এই জন্য! ওর বাবা-মা কেওই জানেন না যে ও এই চাকরিটা করছে, শুধু জানে যে ও একটা চাকরি করছে। কারন, ওর বাবা-মা কেওই এই চাকরিটাকে ভালো চোখে দেখেন না!!!
ও অনেক ক্লান্ত ছিল। কথা বলতে বলতে ওকে এক গ্লাস শরবত বানায়ে দেই। ও এক চুমুকে খেয়ে বলে, ''আপু, এতো ব্যাস্ত থাকি যে বাসাতে যেতে যেতেই অনেক টায়ার্ড হয়ে যাই। এখন কাজ শেষ করে বাসাতে পৌঁছাতে প্রায় রাত হয়ে যাবে।'' এরপর একটু মাথা নিচু করে গ্লাসের দিকে তাকায়ে বলে, ''কতজনে এইটা নিয়ে কতকিছু বলে। কিন্তু কেও তো আর আমার পড়ালেখা করার জন্য সাহায্য করবে না!''
আমাদের এই সুন্দর সমাজ এমনই। একটা মেয়েকে কতভাবে দমায়ে রাখা যায়, তার সবকিছুই প্রয়োগ করে থাকে। কিন্তু একটা মেয়েকে কখনই সাহায্য করে না সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। মেয়েটি যদি নিজ মনোবলের জোরে এগিয়েও যায়, তবে সমাজের কিছু মানুষ আরও খানিকটা এগিয়ে আসে, মেয়েটিকে টেনে পিছনে ফেলার জন্য।
তবুও, থামাতে তো পারে না, ওদের মত,
সাহসী মেয়েদের!
কার্টিসিঃ ফাওজিয়া ফারহাত অনিকা
কিন্তু আসল কথা এগুলা না। আসল বিষয় হল মেয়েটা!!!
মেয়েটা একটা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বছরই ভর্তি হয়েছে, এখনও ক্লাস শুরু হয়নি। ও অনেক চমৎকার করেই কথা বলে, অনেক বন্ধুসুলভ। তাই একটু ইতস্তত করে জিজ্ঞাসা করেই ফেললাম, ''এই চাকরি করতে তোমার সমস্যা হয় না?'' ও অনেক সুন্দর করে একটা হাসি দিয়ে বলে, ''না আপু। এমনিতে কোন সমস্যা হয় না। শুধু এই সিঁড়ি দিয়ে বারবার উঠানামা করাতেই যা কষ্ট!'' এরপর আমি কিছু আর বলি নাই। ও নিজের থেকেই বলা শুরু করে এরপর, ''আসলে সমস্যা বলতে আপু, এখানে নিজের কোন সিকিউরিটি নেই। সেই বাসাতে আমি ঢুকি না, যে বাসাতে নাকি দরজা পর্যন্ত কোন মেয়ে আসে। আর অনেকেই অনেক খারাপ ব্যাবহার করে। আমি বুঝি যে সময় এখন খারাপ, অবিশ্বাস করাটা স্বাভাবিক, কিন্তু মাঝে মাঝে অনেক কষ্ট লাগে।'' অন্য কোন জবের জন্য ট্রাই করার কথা বলতেই বলল যে আড়ং এ এই পর্যন্ত কয়েকশ বার নাকি সিভি দেওয়া হয়ে গেছে। শেষে বাধ্য হয়ে এই জব করছে।
জব করাটা ওর জন্য কেনও দরকার সেটা জানালো। বাসা থেকে এখনই বিয়ে দেবার জন্য ওর বাবা-মা উঠে পড়ে লেগেছেন। কিন্তু ও এখন বিয়ে করতে চায় না। পড়ালেখা শেষ করে, ভালো কোন চাকরি করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে তারপর ও বিয়ে করতে চায়। ও চাকরি করুক, সেটা ওর বাবা-মা চান না। তাই রাগ করে ওর বাবা ওর সাথে কথা বলেন না। ও আমাকে বলে, ''জানেন আপু, আব্বুকে এতো ভালোবাসি যে আব্বুর সাথে কথা না বলে থাকতেই পারি না। কিন্তু আব্বু এতো রাগ করেন, আমি কেনও চাকরি করবো, আমি কেনও পড়ালেখা করবো এই জন্য! ওর বাবা-মা কেওই জানেন না যে ও এই চাকরিটা করছে, শুধু জানে যে ও একটা চাকরি করছে। কারন, ওর বাবা-মা কেওই এই চাকরিটাকে ভালো চোখে দেখেন না!!!
ও অনেক ক্লান্ত ছিল। কথা বলতে বলতে ওকে এক গ্লাস শরবত বানায়ে দেই। ও এক চুমুকে খেয়ে বলে, ''আপু, এতো ব্যাস্ত থাকি যে বাসাতে যেতে যেতেই অনেক টায়ার্ড হয়ে যাই। এখন কাজ শেষ করে বাসাতে পৌঁছাতে প্রায় রাত হয়ে যাবে।'' এরপর একটু মাথা নিচু করে গ্লাসের দিকে তাকায়ে বলে, ''কতজনে এইটা নিয়ে কতকিছু বলে। কিন্তু কেও তো আর আমার পড়ালেখা করার জন্য সাহায্য করবে না!''
আমাদের এই সুন্দর সমাজ এমনই। একটা মেয়েকে কতভাবে দমায়ে রাখা যায়, তার সবকিছুই প্রয়োগ করে থাকে। কিন্তু একটা মেয়েকে কখনই সাহায্য করে না সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। মেয়েটি যদি নিজ মনোবলের জোরে এগিয়েও যায়, তবে সমাজের কিছু মানুষ আরও খানিকটা এগিয়ে আসে, মেয়েটিকে টেনে পিছনে ফেলার জন্য।
তবুও, থামাতে তো পারে না, ওদের মত,
সাহসী মেয়েদের!
কার্টিসিঃ ফাওজিয়া ফারহাত অনিকা
0 comments:
Post a Comment